রা ম শ ং ক র দে ব না থ
এই সেদিন, ২৩ অক্টোবর ২০১২ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় চলে গেছেন অনেক দূর।
সবে প্রকাশনা (বিভাস) প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু করেছি, প্রকাশনা
সংশ্লিষ্ট লেখক-সম্পাদক সবার যথেষ্ট সহযোগিতা পাচ্ছি পূর্বপরিচয়ের সূত্রে।
প্রচ্ছদশিল্পী ধ্রুব এষ দাদার আন্তরিক সহযোগিতা ও পরামর্শ ঢাকা শহরের
নিষ্করুণ লড়াইয়ের ময়দানে আমার মনোবল ধরে রাখতে সহায়ক হয়েছে। ২০১১ সালের
ফেব্রুয়ারির ১ম দিনে টাঙ্গাইলে কবি মাহমুদ কামাল ভাইয়ের কবিতা উত্সবে যোগ
দিতে আসছেন বাংলা সাহিত্যের কলম জাদুকর, বিশ্ব-পর্যটক কবি সুনীল
গঙ্গোপাধ্যায়। ধ্রুব-দার কাছে একদিন গেলাম। বললাম, “আগামী সপ্তাহে সুনীল
গঙ্গোপাধ্যায় বাংলাদেশে আসছেন।” এই নামটাই আমার জন্য এমন গভীর সংবেদনশীল
যে, আমি ভেতরে ভেতরে যেন কেমন আবেগাপ্লুত হয়ে উঠলাম। আমার বুকশেলফ ভর্তি
প্রিয় কবি-লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতাসমগ্র, অর্ধেক জীবন, জীবন যে
রকম, সেই সময়, ছবির দেশে কবিতার দেশে, প্রথম আলো, অর্জুন, পূর্ব-পশ্চিম,
কবিতার জন্য সারা পৃথিবী’র কলকাতার সংস্করণ। ধ্রুব-দাই বললেন, “দেখা করেন,
খুব ভালো মানুষ, অনেক মহান মনের মানুষ, টাকা-পয়সা অবস্থান এসব দেখে তিনি
মানুষের সঙ্গে মেশেন না, যেমন বড় লেখক, তেমনি বড় মনের মানুষ।”
কথাটায় ভরসা পেলাম। আমি আশ্চর্য হয়ে বললাম, “আমার সঙ্গে দেখা কী করবেন?”
“নিশ্চয়ই করবেন, দাঁড়ান, যোগাযোগের ব্যবস্থা করিয়ে দিচ্ছি।”
ধ্রুব-দা সুনীলদার ভ্রাতৃসম কবি শ্যামলকান্তি দাশের সঙ্গে ফোনে কথা বলিয়ে দিলেন।
২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় দিন। অন্য আর দশজন সাধারণ প্রকাশকের মত আমারও ব্যস্ততা তুঙ্গে। ছয়জনের কাজ একাকীই করতে হয়। বেলা ১১টায় মেলা শুরু। তার আগে সকাল ৮টার সময় কাকরাইলস্থ রাজমণি ঈশা খাঁ হোটেলের রিসেপশনে গিয়ে দাঁড়ালাম। এখানেই আমার স্বপ্নের মানুষটি ঘর নিয়েছেন থাকার জন্য। অবশেষে তাঁর সঙ্গে দেখা হলো। হোটেলভর্তি পশ্চিম বাংলার কবি-লেখকরা সাত সকালেই টাঙ্গাইল যাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে আছেন, শুধু সুনীলদার অপেক্ষায়। পরিচয় হলো কবি নবনীতা দেব সেনসহ আরো কয়েকজন কবির সঙ্গে। কবি শ্যামলকান্তি দাশ আমাকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। ক’মিনিট কথা বলা যায় কি-না সন্দেহ। উনি এত ব্যস্ত মানুষ। এরই মধ্যে এসে গেলেন বাংলা প্রকাশের কবি, লেখক হুমায়ূন কবীর ঢালী ভাই ও আরো কয়েক জন।
সুনীলদা নাস্তা খাবার ফাঁকে মোবাইলে কবি বিপাশা মনডলের সঙ্গে নতুনদের কবিতা নিয়ে আলোচনা করলেন।
আমার বই প্রকাশের তালিকা নিয়ে দেখে ‘অর্ধেক জীবন’ নিয়ে কবি শ্যামলকান্তি দাশ একটু অমত করলেন। সুনীলদা শ্যামলকান্তিকে বললেন, আমি আনন্দ পাবলিশার্সকে কপিরাইট দিয়ে দিয়েছি না-কি!
সুনীলদা এমনভাবে কথা বললেন যেন আমি তার অনেক দিনের চেনা। আমাকে সহযোগিতা করার জন্য তাঁর লেখা বই প্রকাশের অনুমতি দিলেন। আমাকে নিয়ে সঙ্গে নাস্তা করলেন। সম্মানীর অর্থ দিতে গেলে নিতে চাইলেন না।
জিজ্ঞেস করলেন, “প্রকাশনা ছাড়া আর কি কর?”
আমি বললাম, “আর কিছুই করি না।”
“স্ত্রী কিছু করে?”
“আগে শিক্ষকতা করত, এখন বাচ্চা নিয়ে করতে পারে না।”
“টাকা এখন দিতে হবে না, আগে বই প্রকাশিত হোক, কিছু মুনাফা কর, তারপর দেবে।”
আমি ইতস্তত স্বরে বললাম, “সেটা ঠিক আছে, কিন্তু শিল্পীর তো একটা সম্মান আছে, আর আপনি যত বড় মহান শিল্পী, আপনাকে সম্মানিত না করে আমি বই প্রকাশ করতে পারি না।”
অত বড় মানুষটাও আমার আকুলতার কাছে হার মানলেন। সম্মানীর অর্থ গ্রহণ করলেন। বললেন, “কলকাতায় গেলে যেন তাঁর বাসায় উঠি।”
প্রথম সাক্ষাতেই আমাকে লিখিত অনুমতি দিয়ে দিলেন। হুমায়ূন কবীর ঢালী ভাই তার ক্যামেরায় কয়েক প্রস্থ ছবি ওঠালেন। হোটেল রাজমণির দক্ষিণ পাশের বড় বড় জানালায় সকালের সূর্যের আলো ঠিকরে পড়ছিল। কালো কাচের পাল্লা দু’টি লাগিয়ে হোটেল রুমের বৈদ্যুতিক বাতিতে আবার ক্যামেরায় ক্লিক... ক্লিক...
একদিন ‘ছবির দেশে কবিতার দেশে’ বইয়ের প্রুফ সংশোধন করতে গিয়ে একটু দ্বিধায় পড়লাম। কিছুতেই সুনীলদার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। তখন আমাদের শ্রদ্ধেয় কবি বেলাল চৌধুরীর শরণাপন্ন হয়েছি। উনি যোগাযোগের ব্যবস্থা করিয়ে দিলেন।
এরপর আর কখনো কোনো বিষয় নিয়ে আমাকে দাদার সঙ্গে দু’বার কথা বলতে হয়নি। যখনই কোনো অসুবিধায় পড়েছি, ফোন দিলেই সঙ্গে সঙ্গে তিনি রিসিভ করেছেন। পরামর্শ দিয়েছেন। অত বড় একজন মানুষ, সাহিত্য আকাদেমীর প্রধান, কত ব্যস্ততা, তারপরও তিনি কখনো বিরক্ত হননি।
২০১১ সালের নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আমার শ্বশুরমশায় কলকাতা গেছেন আরও বই প্রকাশের অনুমতিপত্র নিয়ে। যোগাযোগ করে জানতে পারলাম, তিনি কবিতার আমন্ত্রণে আফ্রিকা গেছেন। তিনি আগামী সপ্তাহে কলকাতায় আসবেন তাও বলেছেন। শ্বশুরমশায় বিভাস-এর চিঠি ও প্রকাশিত বইগুলো নিয়ে সাক্ষাত্ করতে গেলে তিনি চিঠিতে (অনুমতিপত্র) স্বাক্ষর করে দিয়েছেন।
পুজোর আগের সপ্তাহে কথা বললাম সুনীলদার সঙ্গে। শারীরিক অবস্থা নিয়ে কথা হলো দীর্ঘক্ষণ। সবশেষে নতুন কয়েকটি বই প্রকাশের অনুমতি দেয়ার অনুরোধ জানালাম। কিছু সম্মানী-দক্ষিণা পাঠানোর মাধ্যম জানতে চাইলাম। তিনি বললেন, এবার কেউ এলে (কলকাতায় গেলে) তার হাতেই পাঠিয়ে দিও। সঙ্গে নতুন বইগুলোর নামসহ চিঠিটাও।
ফোনেই জিজ্ঞেস করি, খুব শীঘ্র ঢাকা আসছেন কি?
উত্তরে বললেন, কিছুই বোঝা যাচ্ছে না (আসবেন বলে ঠিক নেই)।
আজ আমার মনে হয় এই যে এতবড় মানুষটার সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল, এত সহযোগিতা করেছেন, সেসব সত্যি নয়, যেন স্বপ্ন, মানুষ যে এত দয়াশীল হতে পারে, এত সহযোগিতামূলক মনের মানুষ হতে পারে তাঁকে না জানলে, না দেখলে আমার জানা-দেখা অসম্পূর্ণ থেকে যেত।
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় পরপারে চলে গেছেন। তাঁর পরিবারবর্গ ছাড়া আর কার (ব্যক্তি) কি ক্ষতি হয়েছে জানি না, কিন্তু বাংলা সাহিত্যের যে ক্ষতি হয়েছে তা কখনো পূরণ হবে না। ছেলেবেলা থেকে তাঁর বই পড়ে মুগ্ধ হয়েছি। মানুষের ভালো-মন্দকে বুঝতে শিখেছি, আধুনিকতা সম্পর্কে জেনেছি, তার সরাসরি সংস্পর্শে আসার সৌভাগ্য তাঁর স্নেহ-আনুকূল্য পাওয়া সবার কপালে জোটে না। আমি বাংলাদেশে বসবাস করেও তাঁর যে ভালোবাসা, পিতার স্নেহ পেয়েছি তাতে এমন আমার মনে হয় আমার জন্ম অন্তত এই একটা কারণে হলেও অনেকটা সার্থক।
আমাদের প্রকাশনা সংস্থা বিভাস প্রকাশিত/প্রকাশিতব্য সুনীল গঙ্গোপাধ্যয়ের বই গুলো হচ্ছে : *নির্বাচিত ২০০ কবিতা *অর্ধেক জীবন *রাণু ও ভানু *আমি কেউ না *যুবক যুবতীরা *তিনটি উপন্যাস *জীবন যে রকম *ভয়ংকর সুন্দর *শিশু-কিশোর গল্প *ভালোবাসা, প্রেম নয় *ভয় পেয়ো না নীল মানুষ *পাঁচটি প্রেমের উপন্যাস *কবিতার জন্য সারা পৃথিবী *ছবির দেশে কবিতার দেশে *একটি মেয়ে অনেক পাখি *বরণীয় মানুষ স্মরণীয় বিচার *রবীন্দ্রনাথকে অস্বীকার এবং পুনরাবিষ্কার *অর্জুন *শ্রেষ্ঠ গল্প *সুনীল স্মরণে (হাসান হাফিজ সম্পাদিত)।
কথাটায় ভরসা পেলাম। আমি আশ্চর্য হয়ে বললাম, “আমার সঙ্গে দেখা কী করবেন?”
“নিশ্চয়ই করবেন, দাঁড়ান, যোগাযোগের ব্যবস্থা করিয়ে দিচ্ছি।”
ধ্রুব-দা সুনীলদার ভ্রাতৃসম কবি শ্যামলকান্তি দাশের সঙ্গে ফোনে কথা বলিয়ে দিলেন।
২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় দিন। অন্য আর দশজন সাধারণ প্রকাশকের মত আমারও ব্যস্ততা তুঙ্গে। ছয়জনের কাজ একাকীই করতে হয়। বেলা ১১টায় মেলা শুরু। তার আগে সকাল ৮টার সময় কাকরাইলস্থ রাজমণি ঈশা খাঁ হোটেলের রিসেপশনে গিয়ে দাঁড়ালাম। এখানেই আমার স্বপ্নের মানুষটি ঘর নিয়েছেন থাকার জন্য। অবশেষে তাঁর সঙ্গে দেখা হলো। হোটেলভর্তি পশ্চিম বাংলার কবি-লেখকরা সাত সকালেই টাঙ্গাইল যাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে আছেন, শুধু সুনীলদার অপেক্ষায়। পরিচয় হলো কবি নবনীতা দেব সেনসহ আরো কয়েকজন কবির সঙ্গে। কবি শ্যামলকান্তি দাশ আমাকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। ক’মিনিট কথা বলা যায় কি-না সন্দেহ। উনি এত ব্যস্ত মানুষ। এরই মধ্যে এসে গেলেন বাংলা প্রকাশের কবি, লেখক হুমায়ূন কবীর ঢালী ভাই ও আরো কয়েক জন।
সুনীলদা নাস্তা খাবার ফাঁকে মোবাইলে কবি বিপাশা মনডলের সঙ্গে নতুনদের কবিতা নিয়ে আলোচনা করলেন।
আমার বই প্রকাশের তালিকা নিয়ে দেখে ‘অর্ধেক জীবন’ নিয়ে কবি শ্যামলকান্তি দাশ একটু অমত করলেন। সুনীলদা শ্যামলকান্তিকে বললেন, আমি আনন্দ পাবলিশার্সকে কপিরাইট দিয়ে দিয়েছি না-কি!
সুনীলদা এমনভাবে কথা বললেন যেন আমি তার অনেক দিনের চেনা। আমাকে সহযোগিতা করার জন্য তাঁর লেখা বই প্রকাশের অনুমতি দিলেন। আমাকে নিয়ে সঙ্গে নাস্তা করলেন। সম্মানীর অর্থ দিতে গেলে নিতে চাইলেন না।
জিজ্ঞেস করলেন, “প্রকাশনা ছাড়া আর কি কর?”
আমি বললাম, “আর কিছুই করি না।”
“স্ত্রী কিছু করে?”
“আগে শিক্ষকতা করত, এখন বাচ্চা নিয়ে করতে পারে না।”
“টাকা এখন দিতে হবে না, আগে বই প্রকাশিত হোক, কিছু মুনাফা কর, তারপর দেবে।”
আমি ইতস্তত স্বরে বললাম, “সেটা ঠিক আছে, কিন্তু শিল্পীর তো একটা সম্মান আছে, আর আপনি যত বড় মহান শিল্পী, আপনাকে সম্মানিত না করে আমি বই প্রকাশ করতে পারি না।”
অত বড় মানুষটাও আমার আকুলতার কাছে হার মানলেন। সম্মানীর অর্থ গ্রহণ করলেন। বললেন, “কলকাতায় গেলে যেন তাঁর বাসায় উঠি।”
প্রথম সাক্ষাতেই আমাকে লিখিত অনুমতি দিয়ে দিলেন। হুমায়ূন কবীর ঢালী ভাই তার ক্যামেরায় কয়েক প্রস্থ ছবি ওঠালেন। হোটেল রাজমণির দক্ষিণ পাশের বড় বড় জানালায় সকালের সূর্যের আলো ঠিকরে পড়ছিল। কালো কাচের পাল্লা দু’টি লাগিয়ে হোটেল রুমের বৈদ্যুতিক বাতিতে আবার ক্যামেরায় ক্লিক... ক্লিক...
একদিন ‘ছবির দেশে কবিতার দেশে’ বইয়ের প্রুফ সংশোধন করতে গিয়ে একটু দ্বিধায় পড়লাম। কিছুতেই সুনীলদার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। তখন আমাদের শ্রদ্ধেয় কবি বেলাল চৌধুরীর শরণাপন্ন হয়েছি। উনি যোগাযোগের ব্যবস্থা করিয়ে দিলেন।
এরপর আর কখনো কোনো বিষয় নিয়ে আমাকে দাদার সঙ্গে দু’বার কথা বলতে হয়নি। যখনই কোনো অসুবিধায় পড়েছি, ফোন দিলেই সঙ্গে সঙ্গে তিনি রিসিভ করেছেন। পরামর্শ দিয়েছেন। অত বড় একজন মানুষ, সাহিত্য আকাদেমীর প্রধান, কত ব্যস্ততা, তারপরও তিনি কখনো বিরক্ত হননি।
২০১১ সালের নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আমার শ্বশুরমশায় কলকাতা গেছেন আরও বই প্রকাশের অনুমতিপত্র নিয়ে। যোগাযোগ করে জানতে পারলাম, তিনি কবিতার আমন্ত্রণে আফ্রিকা গেছেন। তিনি আগামী সপ্তাহে কলকাতায় আসবেন তাও বলেছেন। শ্বশুরমশায় বিভাস-এর চিঠি ও প্রকাশিত বইগুলো নিয়ে সাক্ষাত্ করতে গেলে তিনি চিঠিতে (অনুমতিপত্র) স্বাক্ষর করে দিয়েছেন।
পুজোর আগের সপ্তাহে কথা বললাম সুনীলদার সঙ্গে। শারীরিক অবস্থা নিয়ে কথা হলো দীর্ঘক্ষণ। সবশেষে নতুন কয়েকটি বই প্রকাশের অনুমতি দেয়ার অনুরোধ জানালাম। কিছু সম্মানী-দক্ষিণা পাঠানোর মাধ্যম জানতে চাইলাম। তিনি বললেন, এবার কেউ এলে (কলকাতায় গেলে) তার হাতেই পাঠিয়ে দিও। সঙ্গে নতুন বইগুলোর নামসহ চিঠিটাও।
ফোনেই জিজ্ঞেস করি, খুব শীঘ্র ঢাকা আসছেন কি?
উত্তরে বললেন, কিছুই বোঝা যাচ্ছে না (আসবেন বলে ঠিক নেই)।
আজ আমার মনে হয় এই যে এতবড় মানুষটার সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল, এত সহযোগিতা করেছেন, সেসব সত্যি নয়, যেন স্বপ্ন, মানুষ যে এত দয়াশীল হতে পারে, এত সহযোগিতামূলক মনের মানুষ হতে পারে তাঁকে না জানলে, না দেখলে আমার জানা-দেখা অসম্পূর্ণ থেকে যেত।
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় পরপারে চলে গেছেন। তাঁর পরিবারবর্গ ছাড়া আর কার (ব্যক্তি) কি ক্ষতি হয়েছে জানি না, কিন্তু বাংলা সাহিত্যের যে ক্ষতি হয়েছে তা কখনো পূরণ হবে না। ছেলেবেলা থেকে তাঁর বই পড়ে মুগ্ধ হয়েছি। মানুষের ভালো-মন্দকে বুঝতে শিখেছি, আধুনিকতা সম্পর্কে জেনেছি, তার সরাসরি সংস্পর্শে আসার সৌভাগ্য তাঁর স্নেহ-আনুকূল্য পাওয়া সবার কপালে জোটে না। আমি বাংলাদেশে বসবাস করেও তাঁর যে ভালোবাসা, পিতার স্নেহ পেয়েছি তাতে এমন আমার মনে হয় আমার জন্ম অন্তত এই একটা কারণে হলেও অনেকটা সার্থক।
আমাদের প্রকাশনা সংস্থা বিভাস প্রকাশিত/প্রকাশিতব্য সুনীল গঙ্গোপাধ্যয়ের বই গুলো হচ্ছে : *নির্বাচিত ২০০ কবিতা *অর্ধেক জীবন *রাণু ও ভানু *আমি কেউ না *যুবক যুবতীরা *তিনটি উপন্যাস *জীবন যে রকম *ভয়ংকর সুন্দর *শিশু-কিশোর গল্প *ভালোবাসা, প্রেম নয় *ভয় পেয়ো না নীল মানুষ *পাঁচটি প্রেমের উপন্যাস *কবিতার জন্য সারা পৃথিবী *ছবির দেশে কবিতার দেশে *একটি মেয়ে অনেক পাখি *বরণীয় মানুষ স্মরণীয় বিচার *রবীন্দ্রনাথকে অস্বীকার এবং পুনরাবিষ্কার *অর্জুন *শ্রেষ্ঠ গল্প *সুনীল স্মরণে (হাসান হাফিজ সম্পাদিত)।
সূত্র ঃ আমার দেশ, সাহিত্য সাময়িকী।
No comments:
Post a Comment