শীত হালকা পরতে শুরু করে দিয়েছে। তাই কম্বল এর কোন প্রয়োজন পড়ে নি। আজ কেমন যেন একটু বেশী শীত অনুভূত হচ্ছে। একটা কম্বল টেনে যে গায়ে জড়িয়ে নেবে তা ও ইচ্ছা করছে না। শতি কেমন যেন তার উপর অবিচার করছে। শুধু যে শতি তা নয়, তার মতে তার সাথে অবিচার কওে চলেছে তার প্রকৃতি তার সাথে, যা সে স্বীকার করে মেনে নিতে পারে না, তবুও মানতে হয়।
সালেহা বেগম জানেন যে এটা তার একটা ভাগ্য। হোক না সেটা মন্দ ভাগ্য। পৃথিবীতে মানুষ জন্ম নেয় দুইটা ভাগ্য সাথে কওে নিয়ে তার মধ্যে দূভাগ্য হলো একটা ভাগ্য। যদিও এটাকে সকলে এড়িয়ে চলতে চায় তবুও এই ভাগ্যটা কারো পিছু ছাড়ে না। তবুও মানুষ এটাকে চায় না। তার কিছু মানুষ এটাকে এড়িয়ে চললেও এই ভাগ্যটা তার পিছু ছাড়ে না। এটা স্বয়ং স্রষ্ট্রার একটা দান। এটা আবার সবাই অর্জনও করতে পারে না। এই লজিক দাতা সালেহা বেগম নিজেই। যাই হোক। না চাইলেও মানুষ যেমন কিছু কিছু প্রাপ্তি অর্জন করে, এটাও ঠিক তেমন।
পাশের রুমে আলো জ্বলছে। কেন আলো জ্বলছে এত রাতে? তারা তো বিদ্যুৎ বিল ঠিকমত দেয় না।
তাহলে এমন কেন?
নাকি জরুরী কিছু একটা করছে?
এসব হাজারো প্রশ্ন তার মনে ঘুরপাক খেতে থাকে। কি করবে সে তাও সে ভেবে পাচ্ছে না। এই সাবলেটটা নিয়েই যেন তার যত মরণ। কি দরকার ছিল এটা নিতে?
একটা ফাট সে একাই নিয়ে ভাড়া থাকত আগে। কিন্তু এই এত বড় রুমের ভেতর কেমন যেন একা একা বোধ কওে তাই তিন বছর ধরে একটা সাবলেট দিয়ে আসছে। মাঝে মাঝে ওদেও খুব ভাল লাগে। আবার মাঝে মাঝে কেমন যেন লাগে যে মন চায় ধরে তারিয়ে দিতে। যখন তাদের বাচ্চা দুইটা চেচামেচি করে।
এই বাচ্চাদের চেচামেচি তার ভাল লাগে না। না করাতে, না শুনতে। এই বাচ্চাদের কথা মনে পড়াতে তার মনে পড়ে গেল সেই পনের বছর আগের কথা।
তখনও ছিল সেটা শীতকাল। গায়ে কম্বল জড়ানো ছিল। তখন আর এমন একা তার দিনাতিপাত করতে হত না। আফজালের বুকের লোমে তার মুখ লুকানো ছিল। আচ্ছা বলতো আমাদের আগে কি সন্তান চাই?
জানি না। লজ্জায় লাল হয়ে গেল সালেহা বেগম।
আমি চাই একটা মেয়ে হোক আমাদের। কি বল তুমি?
ভালো লাগে না।
কি ভালো লাগে না তোমার?
জানি না।
এই জানি না এর মাঝে কত উত্তর লুকিয়ে আছে জান?
তাও জানি না।
আচ্ছা বিয়ে করলেই কি ছেলে-মেয়ে জন্ম দিয়ে বংশবিস্তার করলেই জীবনটা শেষ?
কি মনে হয় তোমার?
এানুষের জীবনে কি আর কোন পাওয়া থাকতে পারে না?
কি সেটা? একটু বিদঘুটে প্রশ্নটা আফজালের।
কোন চাওয়া
জানি না।
কিছুণ আবার চুপ কওে থাকে সালেহা। তারপর আবার সে বলে, দেখ একটা মানুষের জীবন শুধু বাচ্চা নেওয়ার উপরই চলে না। আর বাচ্চা কিসের ন্য চাই তোমার?
এর মানে কি বোঝাতে চাচ্ছ তুমি?
তুমি কি বাচ্চা নিতে চাও না?
আমি মোটেও তা বলিনি।
তবে।
নিব। তবে পরে অনেক পরে।
কত পরে হতে পারে তা?
তাছাড়া তুমি তো জান যে বাচ্চাদের কান্নাকাটি আমার একদম ভাল লাগে না। আমি ওটা একদম সহ্য করে পারি না।
আফজাল হাসে। সে বলে, দেখ নিজেরটা হলে ঠিক সব সয়ে যাবে। তার জন্য এত চিন্ত্ াকিসের তোমার?
মূহুর্তেই আফজালের সাথে ঘনিষ্টতা থেকে সে সড়ে যায়। আফজালও আর তার দিকে ফিওে ঘুমালো না। সে অন্যদিকে ফিওে দিল এক ঘুম। রাতটাই ব্যর্থ গেল।
আর এখনো সে পারল না একটা বাচ্চার মা হতে।
এই তো সেদিনের ঘটনা। সাবলেট এই মহিলার বাচ্চা কাদছিল। এই কান্নার শব্দ শুনে একদম খারাপ লাগলো তার।
এই আপনার বাচ্চা এভাবে কাদছে কেন?
কাদলে তো আর কিছু করতে পারি না। আমি তো থামানোর চেষ্টা করছি।
কি চেষ্টা করছেন আপনি? আর আমার সাথে আপনি তর্ক করলেন কেন?
কে করল?
আপনি তো করলেন?
দেখেন আমার আপনার সাথে ঝগড়া করার মত কোন ই্চ্ছা নেই।
আমার অনেক ইচ্ছা আছে আপনার সাথে ঝগড়া করার? না? আমি কি ঝগড়াটে মহিলা।
আপনি নিজের গায়ে টেনে কেন কথা বলছেন? কে বলেছে আপনাাকে এসব?
আজব মহিলা তো। বেয়াদব। একদম ফাষ্ট কাস বেয়াদব। তাই কো স্বামীর সাথে এত ঝগড়া হয় প্রতি রাতেই। আমি কি শুনি না?
আপনি কি শোনেন? আপনার মত তো আর বাচ্চা না নিতে পেওে স্বামী ছাড়ি নি।
এই কথাটা শোনার পর তার মেজাজটা ১০০% খারাপ হয়ে গেল। কি যেন আবার ভেবে চুপ হয়ে গেল। আসলে আগে যদি এমন বুঝত যে এমন কথা শুনতে হবে কারো তাহলে অন্তত একটা বাচ্চা নিত ্আর আফজালকেও ত্যাগ করতে হত না।
বেচারা তো ছিল অনেক ভাল। নিজেই তাকে ত্যাগ করলো।
নিজের দোষে।
হুমমম। দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে কিছুণ আবার চুপ করে থেকে কি যেন ভাবতে থাকে। পাশের রুমের লাইটটা অফ হয়ে গেছে। ওরা হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছে। উঠতে ইচ্ছা করছে না। এখন কি কববে তাই ভাবছে। লাইটের সুইচটা অন করে দেয়। ঘরে একটু আলোর আভাস ভেসে আসে। ওয়ারড্রপের কাছে গিয়ে চাবিটা হাতে নিয়ে দাড়ায় সে। ওটা খুলতে ইচ্ছা কওে না।
ড্রেসিং টেবিলের কাছে এসে দাড়ায়। আয়নায় নিজের শশীরটা একটু দেখে নেয়। নেই।
আর আগের মতন সেরকম নেই। বয়স ও তো কম হলো না। বয়সের কাছে তো সবকিছু হার মানে। তবে সবকিছু যে শেষ হয়ে গেছে তাও নয়। পেটে মেদ জমেছে। আগের চেয়ে অনেক মোটাও হয়েছে। শশীরের চামড়া কেমন যেন একটা ভাজ পড়েছে। জোর করে পারা যায় না শশীরের সাথে এটে লাগানো। দুটি চোখের নিচে দাগ পড়ে গেছে। কালো সে দাগ। মনে হয় যেন অনেক রাত ঘুম হয় না তার। কিন্তু আসলেও তা না।
আফজালের সাথে ছাড়াছাড়ি হলো কতদিন হবে?
ঠিক মনে আসছে না। তের বছর পর না কি চৌদ্দ বছর?
তারপর
এরপর থেকে শুধু জীবন-যাপন। একটা দিনও সুখ ছিল না সে জীবনে। না এসেছে স্বামীর সোহাগ। আর । আর কিসের যেন একটা অভাব তার ভেতর সবসময় থেকেই যায়। এটাকে কোন ভাবে দমন করতে পাওে না।
শীত হালকা পরতে শুরু করে দিয়েছে। তাই কম্বল এর কোন প্রয়োজন পড়ে নি। আজ কেমন যেন একটু বেশী শীত অনুভূত হচ্ছে। একটা কম্বল টেনে যে গায়ে জড়িয়ে নেবে তা ও ইচ্ছা করছে না। শতি কেমন যেন তার উপর অবিচার করছে। শুধু যে শতি তা নয়, তার মতে তার সাথে অবিচার কওে চলেছে তার প্রকৃতি তার সাথে, যা সে স্বীকার করে মেনে নিতে পারে না, তবুও মানতে হয়।
সালেহা বেগম জানেন যে এটা তার একটা ভাগ্য। হোক না সেটা মন্দ ভাগ্য। পৃথিবীতে মানুষ জন্ম নেয় দুইটা ভাগ্য সাথে কওে নিয়ে তার মধ্যে দূভাগ্য হলো একটা ভাগ্য। যদিও এটাকে সকলে এড়িয়ে চলতে চায় তবুও এই ভাগ্যটা কারো পিছু ছাড়ে না। তবুও মানুষ এটাকে চায় না। তার কিছু মানুষ এটাকে এড়িয়ে চললেও এই ভাগ্যটা তার পিছু ছাড়ে না। এটা স্বয়ং স্রষ্ট্রার একটা দান। এটা আবার সবাই অর্জনও করতে পারে না। এই লজিক দাতা সালেহা বেগম নিজেই। যাই হোক। না চাইলেও মানুষ যেমন কিছু কিছু প্রাপ্তি অর্জন করে, এটাও ঠিক তেমন।
পাশের রুমে আলো জ্বলছে। কেন আলো জ্বলছে এত রাতে? তারা তো বিদ্যুৎ বিল ঠিকমত দেয় না।
তাহলে এমন কেন?
নাকি জরুরী কিছু একটা করছে?
এসব হাজারো প্রশ্ন তার মনে ঘুরপাক খেতে থাকে। কি করবে সে তাও সে ভেবে পাচ্ছে না। এই সাবলেটটা নিয়েই যেন তার যত মরণ। কি দরকার ছিল এটা নিতে?
একটা ফাট সে একাই নিয়ে ভাড়া থাকত আগে। কিন্তু এই এত বড় রুমের ভেতর কেমন যেন একা একা বোধ কওে তাই তিন বছর ধরে একটা সাবলেট দিয়ে আসছে। মাঝে মাঝে ওদেও খুব ভাল লাগে। আবার মাঝে মাঝে কেমন যেন লাগে যে মন চায় ধরে তারিয়ে দিতে। যখন তাদের বাচ্চা দুইটা চেচামেচি করে।
এই বাচ্চাদের চেচামেচি তার ভাল লাগে না। না করাতে, না শুনতে। এই বাচ্চাদের কথা মনে পড়াতে তার মনে পড়ে গেল সেই পনের বছর আগের কথা।
তখনও ছিল সেটা শীতকাল। গায়ে কম্বল জড়ানো ছিল। তখন আর এমন একা তার দিনাতিপাত করতে হত না। আফজালের বুকের লোমে তার মুখ লুকানো ছিল। আচ্ছা বলতো আমাদের আগে কি সন্তান চাই?
জানি না। লজ্জায় লাল হয়ে গেল সালেহা বেগম।
আমি চাই একটা মেয়ে হোক আমাদের। কি বল তুমি?
ভালো লাগে না।
কি ভালো লাগে না তোমার?
জানি না।
এই জানি না এর মাঝে কত উত্তর লুকিয়ে আছে জান?
তাও জানি না।
আচ্ছা বিয়ে করলেই কি ছেলে-মেয়ে জন্ম দিয়ে বংশবিস্তার করলেই জীবনটা শেষ?
কি মনে হয় তোমার?
এানুষের জীবনে কি আর কোন পাওয়া থাকতে পারে না?
কি সেটা? একটু বিদঘুটে প্রশ্নটা আফজালের।
কোন চাওয়া
জানি না।
কিছুণ আবার চুপ কওে থাকে সালেহা। তারপর আবার সে বলে, দেখ একটা মানুষের জীবন শুধু বাচ্চা নেওয়ার উপরই চলে না। আর বাচ্চা কিসের ন্য চাই তোমার?
এর মানে কি বোঝাতে চাচ্ছ তুমি?
তুমি কি বাচ্চা নিতে চাও না?
আমি মোটেও তা বলিনি।
তবে।
নিব। তবে পরে অনেক পরে।
কত পরে হতে পারে তা?
তাছাড়া তুমি তো জান যে বাচ্চাদের কান্নাকাটি আমার একদম ভাল লাগে না। আমি ওটা একদম সহ্য করে পারি না।
আফজাল হাসে। সে বলে, দেখ নিজেরটা হলে ঠিক সব সয়ে যাবে। তার জন্য এত চিন্ত্ াকিসের তোমার?
মূহুর্তেই আফজালের সাথে ঘনিষ্টতা থেকে সে সড়ে যায়। আফজালও আর তার দিকে ফিওে ঘুমালো না। সে অন্যদিকে ফিওে দিল এক ঘুম। রাতটাই ব্যর্থ গেল।
আর এখনো সে পারল না একটা বাচ্চার মা হতে।
এই তো সেদিনের ঘটনা। সাবলেট এই মহিলার বাচ্চা কাদছিল। এই কান্নার শব্দ শুনে একদম খারাপ লাগলো তার।
এই আপনার বাচ্চা এভাবে কাদছে কেন?
কাদলে তো আর কিছু করতে পারি না। আমি তো থামানোর চেষ্টা করছি।
কি চেষ্টা করছেন আপনি? আর আমার সাথে আপনি তর্ক করলেন কেন?
কে করল?
আপনি তো করলেন?
দেখেন আমার আপনার সাথে ঝগড়া করার মত কোন ই্চ্ছা নেই।
আমার অনেক ইচ্ছা আছে আপনার সাথে ঝগড়া করার? না? আমি কি ঝগড়াটে মহিলা।
আপনি নিজের গায়ে টেনে কেন কথা বলছেন? কে বলেছে আপনাাকে এসব?
আজব মহিলা তো। বেয়াদব। একদম ফাষ্ট কাস বেয়াদব। তাই কো স্বামীর সাথে এত ঝগড়া হয় প্রতি রাতেই। আমি কি শুনি না?
আপনি কি শোনেন? আপনার মত তো আর বাচ্চা না নিতে পেওে স্বামী ছাড়ি নি।
এই কথাটা শোনার পর তার মেজাজটা ১০০% খারাপ হয়ে গেল। কি যেন আবার ভেবে চুপ হয়ে গেল। আসলে আগে যদি এমন বুঝত যে এমন কথা শুনতে হবে কারো তাহলে অন্তত একটা বাচ্চা নিত ্আর আফজালকেও ত্যাগ করতে হত না।
বেচারা তো ছিল অনেক ভাল। নিজেই তাকে ত্যাগ করলো।
নিজের দোষে।
হুমমম। দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে কিছুণ আবার চুপ করে থেকে কি যেন ভাবতে থাকে। পাশের রুমের লাইটটা অফ হয়ে গেছে। ওরা হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছে। উঠতে ইচ্ছা করছে না। এখন কি কববে তাই ভাবছে। লাইটের সুইচটা অন করে দেয়। ঘরে একটু আলোর আভাস ভেসে আসে। ওয়ারড্রপের কাছে গিয়ে চাবিটা হাতে নিয়ে দাড়ায় সে। ওটা খুলতে ইচ্ছা কওে না।
ড্রেসিং টেবিলের কাছে এসে দাড়ায়। আয়নায় নিজের শশীরটা একটু দেখে নেয়। নেই।
আর আগের মতন সেরকম নেই। বয়স ও তো কম হলো না। বয়সের কাছে তো সবকিছু হার মানে। তবে সবকিছু যে শেষ হয়ে গেছে তাও নয়। পেটে মেদ জমেছে। আগের চেয়ে অনেক মোটাও হয়েছে। শশীরের চামড়া কেমন যেন একটা ভাজ পড়েছে। জোর করে পারা যায় না শশীরের সাথে এটে লাগানো। দুটি চোখের নিচে দাগ পড়ে গেছে। কালো সে দাগ। মনে হয় যেন অনেক রাত ঘুম হয় না তার। কিন্তু আসলেও তা না।
আফজালের সাথে ছাড়াছাড়ি হলো কতদিন হবে?
ঠিক মনে আসছে না। তের বছর পর না কি চৌদ্দ বছর?
তারপর
এরপর থেকে শুধু জীবন-যাপন। একটা দিনও সুখ ছিল না সে জীবনে। না এসেছে স্বামীর সোহাগ। আর । আর কিসের যেন একটা অভাব তার ভেতর সবসময় থেকেই যায়। এটাকে কোন ভাবে দমন করতে পাওে না।
সালেহা বেগম জানেন যে এটা তার একটা ভাগ্য। হোক না সেটা মন্দ ভাগ্য। পৃথিবীতে মানুষ জন্ম নেয় দুইটা ভাগ্য সাথে কওে নিয়ে তার মধ্যে দূভাগ্য হলো একটা ভাগ্য। যদিও এটাকে সকলে এড়িয়ে চলতে চায় তবুও এই ভাগ্যটা কারো পিছু ছাড়ে না। তবুও মানুষ এটাকে চায় না। তার কিছু মানুষ এটাকে এড়িয়ে চললেও এই ভাগ্যটা তার পিছু ছাড়ে না। এটা স্বয়ং স্রষ্ট্রার একটা দান। এটা আবার সবাই অর্জনও করতে পারে না। এই লজিক দাতা সালেহা বেগম নিজেই। যাই হোক। না চাইলেও মানুষ যেমন কিছু কিছু প্রাপ্তি অর্জন করে, এটাও ঠিক তেমন।
পাশের রুমে আলো জ্বলছে। কেন আলো জ্বলছে এত রাতে? তারা তো বিদ্যুৎ বিল ঠিকমত দেয় না।
তাহলে এমন কেন?
নাকি জরুরী কিছু একটা করছে?
এসব হাজারো প্রশ্ন তার মনে ঘুরপাক খেতে থাকে। কি করবে সে তাও সে ভেবে পাচ্ছে না। এই সাবলেটটা নিয়েই যেন তার যত মরণ। কি দরকার ছিল এটা নিতে?
একটা ফাট সে একাই নিয়ে ভাড়া থাকত আগে। কিন্তু এই এত বড় রুমের ভেতর কেমন যেন একা একা বোধ কওে তাই তিন বছর ধরে একটা সাবলেট দিয়ে আসছে। মাঝে মাঝে ওদেও খুব ভাল লাগে। আবার মাঝে মাঝে কেমন যেন লাগে যে মন চায় ধরে তারিয়ে দিতে। যখন তাদের বাচ্চা দুইটা চেচামেচি করে।
এই বাচ্চাদের চেচামেচি তার ভাল লাগে না। না করাতে, না শুনতে। এই বাচ্চাদের কথা মনে পড়াতে তার মনে পড়ে গেল সেই পনের বছর আগের কথা।
তখনও ছিল সেটা শীতকাল। গায়ে কম্বল জড়ানো ছিল। তখন আর এমন একা তার দিনাতিপাত করতে হত না। আফজালের বুকের লোমে তার মুখ লুকানো ছিল। আচ্ছা বলতো আমাদের আগে কি সন্তান চাই?
জানি না। লজ্জায় লাল হয়ে গেল সালেহা বেগম।
আমি চাই একটা মেয়ে হোক আমাদের। কি বল তুমি?
ভালো লাগে না।
কি ভালো লাগে না তোমার?
জানি না।
এই জানি না এর মাঝে কত উত্তর লুকিয়ে আছে জান?
তাও জানি না।
আচ্ছা বিয়ে করলেই কি ছেলে-মেয়ে জন্ম দিয়ে বংশবিস্তার করলেই জীবনটা শেষ?
কি মনে হয় তোমার?
এানুষের জীবনে কি আর কোন পাওয়া থাকতে পারে না?
কি সেটা? একটু বিদঘুটে প্রশ্নটা আফজালের।
কোন চাওয়া
জানি না।
কিছুণ আবার চুপ কওে থাকে সালেহা। তারপর আবার সে বলে, দেখ একটা মানুষের জীবন শুধু বাচ্চা নেওয়ার উপরই চলে না। আর বাচ্চা কিসের ন্য চাই তোমার?
এর মানে কি বোঝাতে চাচ্ছ তুমি?
তুমি কি বাচ্চা নিতে চাও না?
আমি মোটেও তা বলিনি।
তবে।
নিব। তবে পরে অনেক পরে।
কত পরে হতে পারে তা?
তাছাড়া তুমি তো জান যে বাচ্চাদের কান্নাকাটি আমার একদম ভাল লাগে না। আমি ওটা একদম সহ্য করে পারি না।
আফজাল হাসে। সে বলে, দেখ নিজেরটা হলে ঠিক সব সয়ে যাবে। তার জন্য এত চিন্ত্ াকিসের তোমার?
মূহুর্তেই আফজালের সাথে ঘনিষ্টতা থেকে সে সড়ে যায়। আফজালও আর তার দিকে ফিওে ঘুমালো না। সে অন্যদিকে ফিওে দিল এক ঘুম। রাতটাই ব্যর্থ গেল।
আর এখনো সে পারল না একটা বাচ্চার মা হতে।
এই তো সেদিনের ঘটনা। সাবলেট এই মহিলার বাচ্চা কাদছিল। এই কান্নার শব্দ শুনে একদম খারাপ লাগলো তার।
এই আপনার বাচ্চা এভাবে কাদছে কেন?
কাদলে তো আর কিছু করতে পারি না। আমি তো থামানোর চেষ্টা করছি।
কি চেষ্টা করছেন আপনি? আর আমার সাথে আপনি তর্ক করলেন কেন?
কে করল?
আপনি তো করলেন?
দেখেন আমার আপনার সাথে ঝগড়া করার মত কোন ই্চ্ছা নেই।
আমার অনেক ইচ্ছা আছে আপনার সাথে ঝগড়া করার? না? আমি কি ঝগড়াটে মহিলা।
আপনি নিজের গায়ে টেনে কেন কথা বলছেন? কে বলেছে আপনাাকে এসব?
আজব মহিলা তো। বেয়াদব। একদম ফাষ্ট কাস বেয়াদব। তাই কো স্বামীর সাথে এত ঝগড়া হয় প্রতি রাতেই। আমি কি শুনি না?
আপনি কি শোনেন? আপনার মত তো আর বাচ্চা না নিতে পেওে স্বামী ছাড়ি নি।
এই কথাটা শোনার পর তার মেজাজটা ১০০% খারাপ হয়ে গেল। কি যেন আবার ভেবে চুপ হয়ে গেল। আসলে আগে যদি এমন বুঝত যে এমন কথা শুনতে হবে কারো তাহলে অন্তত একটা বাচ্চা নিত ্আর আফজালকেও ত্যাগ করতে হত না।
বেচারা তো ছিল অনেক ভাল। নিজেই তাকে ত্যাগ করলো।
নিজের দোষে।
হুমমম। দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে কিছুণ আবার চুপ করে থেকে কি যেন ভাবতে থাকে। পাশের রুমের লাইটটা অফ হয়ে গেছে। ওরা হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছে। উঠতে ইচ্ছা করছে না। এখন কি কববে তাই ভাবছে। লাইটের সুইচটা অন করে দেয়। ঘরে একটু আলোর আভাস ভেসে আসে। ওয়ারড্রপের কাছে গিয়ে চাবিটা হাতে নিয়ে দাড়ায় সে। ওটা খুলতে ইচ্ছা কওে না।
ড্রেসিং টেবিলের কাছে এসে দাড়ায়। আয়নায় নিজের শশীরটা একটু দেখে নেয়। নেই।
আর আগের মতন সেরকম নেই। বয়স ও তো কম হলো না। বয়সের কাছে তো সবকিছু হার মানে। তবে সবকিছু যে শেষ হয়ে গেছে তাও নয়। পেটে মেদ জমেছে। আগের চেয়ে অনেক মোটাও হয়েছে। শশীরের চামড়া কেমন যেন একটা ভাজ পড়েছে। জোর করে পারা যায় না শশীরের সাথে এটে লাগানো। দুটি চোখের নিচে দাগ পড়ে গেছে। কালো সে দাগ। মনে হয় যেন অনেক রাত ঘুম হয় না তার। কিন্তু আসলেও তা না।
আফজালের সাথে ছাড়াছাড়ি হলো কতদিন হবে?
ঠিক মনে আসছে না। তের বছর পর না কি চৌদ্দ বছর?
তারপর
এরপর থেকে শুধু জীবন-যাপন। একটা দিনও সুখ ছিল না সে জীবনে। না এসেছে স্বামীর সোহাগ। আর । আর কিসের যেন একটা অভাব তার ভেতর সবসময় থেকেই যায়। এটাকে কোন ভাবে দমন করতে পাওে না।
শীত হালকা পরতে শুরু করে দিয়েছে। তাই কম্বল এর কোন প্রয়োজন পড়ে নি। আজ কেমন যেন একটু বেশী শীত অনুভূত হচ্ছে। একটা কম্বল টেনে যে গায়ে জড়িয়ে নেবে তা ও ইচ্ছা করছে না। শতি কেমন যেন তার উপর অবিচার করছে। শুধু যে শতি তা নয়, তার মতে তার সাথে অবিচার কওে চলেছে তার প্রকৃতি তার সাথে, যা সে স্বীকার করে মেনে নিতে পারে না, তবুও মানতে হয়।
সালেহা বেগম জানেন যে এটা তার একটা ভাগ্য। হোক না সেটা মন্দ ভাগ্য। পৃথিবীতে মানুষ জন্ম নেয় দুইটা ভাগ্য সাথে কওে নিয়ে তার মধ্যে দূভাগ্য হলো একটা ভাগ্য। যদিও এটাকে সকলে এড়িয়ে চলতে চায় তবুও এই ভাগ্যটা কারো পিছু ছাড়ে না। তবুও মানুষ এটাকে চায় না। তার কিছু মানুষ এটাকে এড়িয়ে চললেও এই ভাগ্যটা তার পিছু ছাড়ে না। এটা স্বয়ং স্রষ্ট্রার একটা দান। এটা আবার সবাই অর্জনও করতে পারে না। এই লজিক দাতা সালেহা বেগম নিজেই। যাই হোক। না চাইলেও মানুষ যেমন কিছু কিছু প্রাপ্তি অর্জন করে, এটাও ঠিক তেমন।
পাশের রুমে আলো জ্বলছে। কেন আলো জ্বলছে এত রাতে? তারা তো বিদ্যুৎ বিল ঠিকমত দেয় না।
তাহলে এমন কেন?
নাকি জরুরী কিছু একটা করছে?
এসব হাজারো প্রশ্ন তার মনে ঘুরপাক খেতে থাকে। কি করবে সে তাও সে ভেবে পাচ্ছে না। এই সাবলেটটা নিয়েই যেন তার যত মরণ। কি দরকার ছিল এটা নিতে?
একটা ফাট সে একাই নিয়ে ভাড়া থাকত আগে। কিন্তু এই এত বড় রুমের ভেতর কেমন যেন একা একা বোধ কওে তাই তিন বছর ধরে একটা সাবলেট দিয়ে আসছে। মাঝে মাঝে ওদেও খুব ভাল লাগে। আবার মাঝে মাঝে কেমন যেন লাগে যে মন চায় ধরে তারিয়ে দিতে। যখন তাদের বাচ্চা দুইটা চেচামেচি করে।
এই বাচ্চাদের চেচামেচি তার ভাল লাগে না। না করাতে, না শুনতে। এই বাচ্চাদের কথা মনে পড়াতে তার মনে পড়ে গেল সেই পনের বছর আগের কথা।
তখনও ছিল সেটা শীতকাল। গায়ে কম্বল জড়ানো ছিল। তখন আর এমন একা তার দিনাতিপাত করতে হত না। আফজালের বুকের লোমে তার মুখ লুকানো ছিল। আচ্ছা বলতো আমাদের আগে কি সন্তান চাই?
জানি না। লজ্জায় লাল হয়ে গেল সালেহা বেগম।
আমি চাই একটা মেয়ে হোক আমাদের। কি বল তুমি?
ভালো লাগে না।
কি ভালো লাগে না তোমার?
জানি না।
এই জানি না এর মাঝে কত উত্তর লুকিয়ে আছে জান?
তাও জানি না।
আচ্ছা বিয়ে করলেই কি ছেলে-মেয়ে জন্ম দিয়ে বংশবিস্তার করলেই জীবনটা শেষ?
কি মনে হয় তোমার?
এানুষের জীবনে কি আর কোন পাওয়া থাকতে পারে না?
কি সেটা? একটু বিদঘুটে প্রশ্নটা আফজালের।
কোন চাওয়া
জানি না।
কিছুণ আবার চুপ কওে থাকে সালেহা। তারপর আবার সে বলে, দেখ একটা মানুষের জীবন শুধু বাচ্চা নেওয়ার উপরই চলে না। আর বাচ্চা কিসের ন্য চাই তোমার?
এর মানে কি বোঝাতে চাচ্ছ তুমি?
তুমি কি বাচ্চা নিতে চাও না?
আমি মোটেও তা বলিনি।
তবে।
নিব। তবে পরে অনেক পরে।
কত পরে হতে পারে তা?
তাছাড়া তুমি তো জান যে বাচ্চাদের কান্নাকাটি আমার একদম ভাল লাগে না। আমি ওটা একদম সহ্য করে পারি না।
আফজাল হাসে। সে বলে, দেখ নিজেরটা হলে ঠিক সব সয়ে যাবে। তার জন্য এত চিন্ত্ াকিসের তোমার?
মূহুর্তেই আফজালের সাথে ঘনিষ্টতা থেকে সে সড়ে যায়। আফজালও আর তার দিকে ফিওে ঘুমালো না। সে অন্যদিকে ফিওে দিল এক ঘুম। রাতটাই ব্যর্থ গেল।
আর এখনো সে পারল না একটা বাচ্চার মা হতে।
এই তো সেদিনের ঘটনা। সাবলেট এই মহিলার বাচ্চা কাদছিল। এই কান্নার শব্দ শুনে একদম খারাপ লাগলো তার।
এই আপনার বাচ্চা এভাবে কাদছে কেন?
কাদলে তো আর কিছু করতে পারি না। আমি তো থামানোর চেষ্টা করছি।
কি চেষ্টা করছেন আপনি? আর আমার সাথে আপনি তর্ক করলেন কেন?
কে করল?
আপনি তো করলেন?
দেখেন আমার আপনার সাথে ঝগড়া করার মত কোন ই্চ্ছা নেই।
আমার অনেক ইচ্ছা আছে আপনার সাথে ঝগড়া করার? না? আমি কি ঝগড়াটে মহিলা।
আপনি নিজের গায়ে টেনে কেন কথা বলছেন? কে বলেছে আপনাাকে এসব?
আজব মহিলা তো। বেয়াদব। একদম ফাষ্ট কাস বেয়াদব। তাই কো স্বামীর সাথে এত ঝগড়া হয় প্রতি রাতেই। আমি কি শুনি না?
আপনি কি শোনেন? আপনার মত তো আর বাচ্চা না নিতে পেওে স্বামী ছাড়ি নি।
এই কথাটা শোনার পর তার মেজাজটা ১০০% খারাপ হয়ে গেল। কি যেন আবার ভেবে চুপ হয়ে গেল। আসলে আগে যদি এমন বুঝত যে এমন কথা শুনতে হবে কারো তাহলে অন্তত একটা বাচ্চা নিত ্আর আফজালকেও ত্যাগ করতে হত না।
বেচারা তো ছিল অনেক ভাল। নিজেই তাকে ত্যাগ করলো।
নিজের দোষে।
হুমমম। দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে কিছুণ আবার চুপ করে থেকে কি যেন ভাবতে থাকে। পাশের রুমের লাইটটা অফ হয়ে গেছে। ওরা হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছে। উঠতে ইচ্ছা করছে না। এখন কি কববে তাই ভাবছে। লাইটের সুইচটা অন করে দেয়। ঘরে একটু আলোর আভাস ভেসে আসে। ওয়ারড্রপের কাছে গিয়ে চাবিটা হাতে নিয়ে দাড়ায় সে। ওটা খুলতে ইচ্ছা কওে না।
ড্রেসিং টেবিলের কাছে এসে দাড়ায়। আয়নায় নিজের শশীরটা একটু দেখে নেয়। নেই।
আর আগের মতন সেরকম নেই। বয়স ও তো কম হলো না। বয়সের কাছে তো সবকিছু হার মানে। তবে সবকিছু যে শেষ হয়ে গেছে তাও নয়। পেটে মেদ জমেছে। আগের চেয়ে অনেক মোটাও হয়েছে। শশীরের চামড়া কেমন যেন একটা ভাজ পড়েছে। জোর করে পারা যায় না শশীরের সাথে এটে লাগানো। দুটি চোখের নিচে দাগ পড়ে গেছে। কালো সে দাগ। মনে হয় যেন অনেক রাত ঘুম হয় না তার। কিন্তু আসলেও তা না।
আফজালের সাথে ছাড়াছাড়ি হলো কতদিন হবে?
ঠিক মনে আসছে না। তের বছর পর না কি চৌদ্দ বছর?
তারপর
এরপর থেকে শুধু জীবন-যাপন। একটা দিনও সুখ ছিল না সে জীবনে। না এসেছে স্বামীর সোহাগ। আর । আর কিসের যেন একটা অভাব তার ভেতর সবসময় থেকেই যায়। এটাকে কোন ভাবে দমন করতে পাওে না।